ইন্টারনেট কি | ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে

বর্তমান সময়ে মোবাইল বা ইন্টারনেট ব্যবহার করে না এমন লোক হয়তো খুঁজে পাওয়াই যাবে না। তবে আমাদের অনেকের মনে হয়তো প্রশ্ন জাগে ইন্টারনেট কি,ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে এসব নিয়ে। আমি এই আর্টিকেলে ইন্টারনেট নিয়ে সমস্ত তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করবো।

উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের একটি শিক্ষার্থী থেকেমশুরু করে ৭০-৮০ বছরের বৃদ্ধ লোকটাও এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে। পৃথিবীর এমন কোনো তথ্য নাই যেটা ইন্টারনেটে না পাওয়া যায়। তাই আজকে এই ইন্টারনেটের পরিচিতি নিয়েই কথা বলবো।
আশা করি সম্পূর্ণ সময় আমাদের সাথেই থাকবেন।

ইন্টারনেট কি

কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক।

 

ইন্টারনেট কি

 

ইন্টারনেট হলো নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক। যে সিস্টেম বা পদ্ধতির মাধ্যমে বিশ্বের সকল তথ্য এবং সকল কম্পিউটারকে একত্রে যুক্ত করা হয় সেই সিস্টেম বা পদ্ধতিকে ইন্টারনেট বলা হয়।

এই সিস্টেমে ১ম কম্পিউটার এর সাথে ২য় কম্পিউটার এবং ২য় কম্পিউটার এর সাথে ৩য় কম্পিউটার যুক্ত থাকে। এভাবেই একটি কম্পিউটারের সাথে অপর একটি কম্পিউটার যুক্ত হয়ে ইন্টারনেট তৈরি হয়ে থাকে।

আপনি যদি ইন্টারনেট থেকে কোনো তথ্য পেতে চান তাহলে আপনাকে Hyper Text Transfer Protocol বা http এর মাধ্যমে World Wide Web বা www এ যুক্ত হতে হবে।

 

 

ইন্টারনেট এর ইতিহাস

১৯৬৯ সালে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা এডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি বা ARPA পরীক্ষামূলক ভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। প্রথম দিকের এই নেটওয়ার্ক পদ্ধতিকে আরপানেট (ARPANET) হিসেবে পরিচিত ছিলো।

Ridoy Hasan Alif - Blog

প্রথম দিকে এটি শুধু সামরিক বাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ করার জন্য তৈরি করা হলেও এর সুবিধা গুলো দেখে পরবর্তীতে এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। ১৯৮৯ সালে আইএসপি দ্বারা সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয় আজকের এই ইন্টারনেট।

১৯৯০ সাল বা এর পর থেকে সারা বিশ্বে ইন্টারনেট এর ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটতে থাকে।

 

ইন্টারনেটের জনক কে

বর্তমানে আমরা কেনাকাটা থেকে শুরু করে চাকরি করাও ইন্টারনেটের মাধ্যমে করে থাকি। কিন্তু আমরা কি জানি ইন্টারনেটনএর জন কে বা কারা। আমরা কি জানি কাদের জন্য আমরস এত ভালো একটা সুযোগ পেয়েছি?

আসুন বিস্তারিত জেনে নিন।

ইন্টারনেট আবিষ্কারের পিছনে অনেকের অবদান থাকলেও যে দুজন ব্যক্তির নাম সারা জীবন মনে থাকবে তাদের দুজনের নাম হলো রবার্ট ই কান এবং ভিনটন জি কার্ফ।

তারা Tran-mission Control Protocol ( TCP ) and the Internet protocol ( IP ) এই দুই প্রোটোকল আবিস্কার করেছে।

 

ইন্টারনেট কত প্রকার

 

ইন্টারনেটকে মূলত ৬ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথাঃ

ডায়াল আপ
ডি এস এল
স্যাটেলাইট
ক্যাবল
ওয়ারলেস
সেলুলার

 

ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে

 

আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটার এ এত তথ্য কিভাবে আদান প্রদান হয় বা ইন্টারনেট আসলে কিভাবে কাজ করে।

আসুন ইন্টারনেট নিয়ে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিই

 

মোবাইল ফোন আবিষ্কার হওয়ার আগে সকল জায়গায় যোগাযোগের জন্য ল্যান্ডফোন ব্যবহার করা হতো এবং সব গুলো ল্যান্ডফোন একটি ক্যাবল তারের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হতো। প্রতিটি ল্যান্ডফোনের নিদিষ্ট একটি নাম্বার থাকতো যেটি কেউ ডায়াল করলে শুধু সেই টেলিফোনেই কল যেতো।

ঠিক একই ভাবে বর্তমানে সকল কম্পিউটার বা ডিভাইসকে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়ে থাকে।

প্রতিটি ডিভাইস বা সার্ভারে একটি করে নিদিষ্ট আইপি এড্রেস থাকে। আপনি যদি কোনো আইপি এড্রেস লিখে এন্টার করেন তাহলে সেখানে থাকা সকল তথ্য আপনার সামনে চলে আসবে।

ধরুন আপনি আমারহোস্টার থেকে হোস্ট কিনতে চান।

তাহলে আপনাকে প্রথমে যেকোনো একটি ব্রাউজারে গিয়ে AmarHoster.com বা এর আইপি এড্রসে লিখে এন্টার করতে হবে। তাহলে আপনি আমারহোস্টারে থাকা সকল প্যাকেজ গুলো পেয়ে যাবেন।

 

ইন্টারনেট ব্যবহার করতে কি কি প্রয়োজন হয়

 

 

যেহেতু একটি ডিভাইসের সাথে অপর একটি ডিভাইস যুক্ত হয়ে ইন্টারনেট গঠিত হয়েছে তাই ইন্টারনেট ব্যবহারের হয প্রথমেই আপনার একটি ডিভাইস যেমনঃ মোবাইল,ট্যাবলেট,কম্পিউটার ইত্যাদি।

তারপর আপনার একটি ব্রাউজার লাগবে যেমনঃ Chrome, FireFox, Edge,Opera ইত্যাদি।

 

অনকেই বলে থাকে ইন্টারনেট খারাপ আবার অনেকেই ভালো বলে থাকে।

তাই আসুন, ইন্টারনেটের সুবিধা ও অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করে নিই।

 

 

ইন্টারনেটের সুবিধা ও অসুবিধা

 

সুবিধা

 

দৈনন্দিন কাজ

 

মনে করুন আপনার পরিবারে কেউ রান্না করতে পারে না। একজন কাজের লোক রাখছেন যে আপনাদের সকল রান্না করে দেয়।

হঠাৎ করে সে একদিন না এলে তাহলে আপনাদের কি অবস্থা হবে বুঝতে পারছেন?

জ্বি হ্যাঁ, আপনাদের সকলকে না খেয়ে থাকতে হবে।

কিন্তু ইন্টারনেট আপনাকে এধরনের সমস্যার সমাধান করে দিয়েছে। আপনি এখন ঘরে বসেই খাবার অর্ডার দিলেই খাবার চলে আসবে আপনার দরজায়।

শুধু খাবার নয়। মাথার চুলের শ্যাম্পু থেকে শুরু করে পায়ের মোজা পর্যন্ত অনলাইন থেকে কেনা যায়।

এজন্য আপনাকে কোথায় যেতে হবে না। ঘরে বালই সব করতে পারবেন।

 

কেনা কাটা

ঈদের সময় মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করার অভিজ্ঞতা আমাদের সকলেই আছে। প্রতি বছর এমন ভাবে মার্কেট করতে আমাদের কারোর আর ভালো লাগে না।

তবে আপনাকে এখন আর মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করতে হবে না কারণ এখন বড় বড় কম্পানি গুলো তাদের ব্যবসা কে অনলাইন ভিত্তিক করে ফেলেছে।

আপনি ঘরে বসেই যে কোনো কিছু অর্ডার করলেই তা চলে আসবে আপনার কাছে।

 

 

টাকা ইনকাম

অমুকের ছেলে অনলাইনে এই কাজ করে,তমুকের ছেলে সেই কাজ করে মাসে মাসে লাখ টাকা আয় করছে এমন কথা প্রায়ই শোনা যায়।

জ্বি হ্যাঁ, আপনার যদি নিদিষ্ট কোনো বিষয়ে ভালো দক্ষতা থাকে তাহলে আপনি বিভিন্ন জায়গায় কাজ করে নিজের ঘরে বসেই মাসে হাজার হাজার টাকা আয় করে নিতে পারবেন।

অফিশিয়াল কাজ

২০২০ সালে করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে চাকরী জীবীদের উপর এক ধরনের হুমকী চলে আসে। অনেকেই তাদের চাকরি হারায়।

তাই অনেক কম্পানি এখন তাদের কম্পানিকে অনলাইন ভিত্তিক বা ভার্চুয়ালি করে ফেলেছে।

এখন আর জ্যামের মধ্যে প্রতিদিন অফিসে গিয়ে কাজ করতে হয় না। কারণ কেউ চাইলেই ল্যাপটপের মাধ্যমে অফিসের সকল কাজ করতে পারে।

 

তথ্য খোঁজার জন্য

মনে করুন আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে নতুন কোথাও ঘুরতে যাবেন যে জায়গাটি আপনাদের সকলের কাছেই একদম নতুন।

তাই আপনি যদি গুগলে গিয়ে যদি সেই জায়গায় নাম লিখে সার্চ দেন তাহলে জায়গাটি নিয়ে সকল তথ্য পেয়ে যাবেন।

সেখানে গেলে কত খরচ হবে। কোথায় কোন হোটেল পাওয়া যায় সকল তথ্যই পাবেন।

তাই তথ্য খোঁজায় বিষয়টি অনেক সহজ হয়ে গিয়েছে।

 

আরো পড়ুন

এসইও কি | কিভাবে এসইও করবো | বাংলা এসইও কোর্স

নিজের ওয়েবসাইট থেকে টাকা আয় করার সহজ উপায় ২০২২ | অনলাইন থেকে টাকা আয়

 

বিনোদনের এর ক্ষেত্রে

ইন্টারনেট এ থাকা বিভিন্ন বিনোদন মূলক প্লাটফর্ম যেমনঃ টিকটক,ইউটিউব,লাইকি এসব অ্যাপ ব্যবহার করে আপনার জীবনকে আনন্দ ময় করে তুলতে পারবেন।

 

শিক্ষার ক্ষেত্রে

আমরা যারা শিক্ষার্থী আছি তাদের জন্য অনলাইন একটি প্রয়োজনীয় বিষয়। আমাদের নতুন কোনো কিছু জানার প্রয়োজন হলেই আমরা গুগলে সার্চ দিয়ে তা পেতে পারি।

এমনকি অনেকে অনলাইকে টিউশনি করে মাসে অনেক টাকা আয় করতে পারে।

 

 

অসুবিধা

 

বর্তমান সময়ে মানুষের বিশেষ করে কমবয়সী ছেলেমেয়েদের মাঝে একটি খারাপ নেশা হলো সারা দিন ইন্টারনেট ব্যবহার করা।

সারা দিন ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাদের মূল্যবান সময় গুলো নষ্ট করছে।

এতে তাদের পড়ালেখার অনেক ক্ষতি হচ্ছে।

এমনি সারস দিন স্কিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের এবং মাথার সমস্যা হতে পারে।

তাই এসব বিষয়ে আমাদের সতর্ক হতে হবে।

উপসংহার

ইন্টারনেট জালের মতো করে সারা বিশ্বকে আগলে রেখেছে। এর কিছু খারাপ দিক বাদ দিলে বাকি সব কিছহ আমাদের জন্য অনেক উপকারী।

তাই খারাপ দিক গুলো বাদ দিয়ে আমাদের ভালো দিক গুলো ব্যবহার করতে হবে।

কোনো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাবেন।

আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment