চলতি বছরের এপ্রিল মাসের ১০ / ১১ তারিখ। আকাশে কড়া রোদ।
কৃষি নিয়ে পড়ালেখা করি তাই প্রায় দিনই নানান কাজ করতে হয়। সেদিন হয়তো আমরা কিছু শাকের প্লট তৈরি করছি। নির্দেশনায় ছিলেন রাজিব সরকার স্যার।
রোদ থাকায় এক বন্ধু স্যার কে বলে উঠলো তার অনেক জ্বর তাই তারে যেন ছুটি দেওয়া হয়।
স্যার বললো যে আমি নিজেও অসুস্থ কিন্তু আমারে দেখে কি বুঝা যায়? সে বললো যে সবাই অসুস্থ থাকে কিন্তু সেটা নিয়ে চিন্তা না করে ভালো থাকার চেষ্টা করাই ভালো।
আরেকটা ঘটনা বলা যাকঃ
বছর কয়েক আগে ডিসকভারি চ্যানেলে একটা অনুষ্ঠান হতো বিজ্ঞান বিষয়ক। সেখানে এক পর্বে কিছু লোকদের প্রচন্ড ঝাল মরিচ খেতে দেওয়া হয়। প্রথম দিকে তারা খেতে পারে না কিন্তু একটু পরে উপস্থাপক কোনো ভাবে তাদের বুঝায় যে তাদের কে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খাওয়ানো হচ্ছে!
হাস্যকর মনে হলেও কিছু সময় পর দেখা যায় যে লোকগুলো মরিচ কে স্বাভাবিক খাবার হিসেবেই খাওয়া শুরু করে। তাদের মাঝে ঝালের রেশ মাত্র পাওয়া যায় না।
এখন আসি আসল কথায়।
দুটি ঘটনা বলার কারণ হলো আমাদের ব্রেইনের ক্ষমতা বোঝানোর জন্য। আমরা বা আমাদের ব্রেইন যেটা নিয়ে চিন্তা করি আমাদের সাথে সেটাই ঘটে।
আপনি যদি মনে করেন রাস্তায় বের হলেই এক্সিডেট হবে তাহলে আপনি কোনো দিন রাস্তায় বের হতে পারবেন না। যদি মনে করেন আমার আইফোন কেনার ক্ষমতা নেই তাহলে সেটা কিনতে পারবেন না। আর যদি বিশ্বাস রাখেন যে কিনতে পারবেন তাহলে কিডনী বিক্রি করে হলেও সেটা কিনতে পারবেন।
আমাদের ব্রেইন সাধারণত ৩ প্রকার। কনসিয়াস মাইন্ড, সাব কনসিয়াস মাইন্ড আর আন কন্সিয়াস মাইন্ড।
আমরা কথা বলছি সাব কনসিয়াস মাইন্ড নিয়ে কারণ এটাই আমাদের চালনা করে।
আমাদের সকল কাজের মাত্র ১০ % চালনা করে কনসিয়াস মাইন্ড। বাকি ৯০% কাজ চালনা করে সাব কনসিয়াস মাইন্ড যেটা নিয়ন্ত্রণ করা কস্টস্বাধ্য ব্যাপার।
এক গবেষণায় দেখা গেছে বেশির ভাগ সফল ব্যাক্তি তাদের সাব কনসিয়াস মাইন্ডের মাত্র ১০% ব্যবহার করতে পারছে। তবুও তারা সফল।
তাহলে ভাবুন এর কার্যকারিতা কত বেশি।
উপরের অসুস্থ বা মরিচের বিষয়টি বলা যাক। আপনি একটা বিষয় নিয়ে যত বেশি চিন্তা করবেন তত বেশি সেটা আপনাকে ধরে রাখবেন।
ধরেন আপনি কোথায় হোঁচড় খেয়ে ব্যাঁথা পেলেন। আপনি যদি তার পর পরই অন্য কোনো কাজে মন নিবেশ করতে পারেন তাহলে কিছু সময় পর খেয়াল করবেন আপনার আর কোনো ব্যাথা নেই।
ব্যাকআপ হলে ছেলে মেয়ে কত কষ্টে থাকে কারণ তারা আগে সারাদিন তাকে নিয়ে ভাবতো এখনও সেটাও করে তাই তাকে ভুলতে পারে না।
যদি সে অন্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারে তাহলে দেখবেন সে সব ভুলে গেসে।
কনসিয়াস মাইন্ড সাধারণত মানুষ জাগ্রত থাকলে কাজ করে আর সাব কনসিয়াস মাইন্ড মানুষ ঘুমিয়ে গেলেও কাজ করতে থাকে।
এবার একটু ব্যবসার দিকে আসা যাক
আমরা প্রতি এত এত বিজ্ঞাপন দেখতে পারি কিন্তু এক গবেষণায় দেখা গেসে মানুষ একটা প্রোডাক্ট কিনতে কিনা সেটার ৯৫% সিদ্ধান্ত নেয় সাব কনসিয়াস মাইন্ড। যেটা নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টের কাজ।
আর বাকি ৫% সিদ্ধান্ত আমরা নিজেরা নিতে পারি। এই ৫% এর জন্য কম্পানিরা এত বিজ্ঞাপন তৈরি করে।
Tobacco Industry Marketing and Advertising
সারাক্ষণ আমাদের মনে কিছু না কিছু নিয়ে ভাবনা চলতেই থাকে। শুধু জেগে থাকতে নয় ঘুমিয়ে গেলেও আমরা স্বপ্ন দেখি। আমি যতদূর জানি আমরা ঘুমিয়ে যাওয়ার ৮০ মিনিট বা এমন সময় পর থেকে স্বপ্ন দেখা শুরু করি। এই সময়েও কাজ করে করে এই মাইন্ড।
এটা নিয়ে এত কথা বলছি কারণ এটাতেই আমাদের সকল সত্য লুকিয়ে আছে। আছে আমাদের সফলতা, ব্যর্থতা।
যেমন ধরেন আপনি সবে মাত্র একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হলেন। এখন আপনার মন বলবে ইন্টার পরীক্ষার তো আরো দুবছর বাকি আছে। এখুনি এত পড়ার কি আছে। কারণ আমাদের মাইন্ড বেশি পরিশ্রম করতে চায় না।
কিছু সময় চিল করি। এমন করে চিল করতে করতে কখন যে পরীক্ষার দিন চলে আসে বুঝতেই পারি না। শেষমেষ পরীক্ষা খারাপ হয়।
এমন হয় আমাদের সকল কাজে। একটা কাজ করতেছি একটু পরেই আলসেমি শুরু হবে।
ঠিক এই সময়ে আপনি যদি মনকে শক্ত করে কাজে লেগে থাকতে পারেন তবেই বুঝবেন আসল মজা।
দেখবেন এভাবে কয়েক দিন করার পর তখন এক টানা কাজ করলেও সমস্যা হবে না।
অর্থাৎ আমরা সাব কনসিয়াস মাইন্ড কে কন্ট্রোল এ নিতে পারলেই আমরা কাজে সফলতা পাবো। আর মন যা চায় তার পিছনে ছুটলে কুল কিনারা খুঁজে পাওয়া যাবে না।
Deprecated: str_contains(): Passing null to parameter #1 ($haystack) of type string is deprecated in /home/ridoyhas/blog.ridoyhasanalif.com/wp-includes/comment-template.php on line 2681